দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজনৈতিক অবদান
সমুদ্রগুপ্তের উত্তরাধিকারী হিসেবে তাঁর পুত্র দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ৩৭৬ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন। অনেকেই মনে করেন যে, সমুদ্রগুপ্তের ন্যায়সঙ্গত উত্তরাধিকারী ছিলেন রামগুপ্ত। আসলে এই ধারণাটির উদ্ভব হয়েছে বিশাখদত্তের দেবীচন্দ্রগুপ্তম নাটক থেকে, যেখানে দেখা যাচ্ছে যে রামগুপ্ত শক রাজার হাতে পরাজিত ও নিহত হলে তার ভাই দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত কৌশলে শক শিবিরে ঢুকে শক রাজাকে হত্যা করে তাঁর বৌদি ধ্রুব দেবীর পানি গ্রহণ করেন। কিন্তু দীনেশচন্দ্র সরকার উপরোক্ত ধারণার অসারতা প্রমাণ করেছেন মথুরা স্তম্ভলেখর আলোকে। তাছাড়া রামগুপ্তের মুদ্রাগুলি কোনো মতেই ষষ্ঠ শতকের আগের নয়। তাই রামগুপ্ত দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সমসাময়িক ছিলেন না এবং দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তই ছিলেন সমুদ্রগুপ্তের অব্যবহিত উত্তরাধিকারী।
দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের শাসনকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল পশ্চিম ভারতের ক্ষমতাসীন শক ক্ষত্রপদের উৎখাত। শক ক্ষত্রপ চষ্টন গুজরাট, কাথিয়াবাড় এবং উজ্জয়িনী এলাকায় রাজত্ব করছিলেন। মুদ্রাগত সাক্ষ্য থেকে জানা যায়, ৪১০-৪১১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত তাদেরকে ওই এলাকা থেকে উৎখাত করতে সক্ষম হলেন। যদিও শক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চলে আসছিল সমুদ্রগুপ্তের আমল থেকেই। পশ্চিম ভারতে শক শাসনের অবসানের ফলে উর্বর ও সমুদ্রসন্নিহিত বন্দর এলাকা, যা অর্থনৈতিকভাবে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, গুপ্তদের অধিকারে আসে।
দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের শাসনকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল পশ্চিম ভারতের ক্ষমতাসীন শক ক্ষত্রপদের উৎখাত। শক ক্ষত্রপ চষ্টন গুজরাট, কাথিয়াবাড় এবং উজ্জয়িনী এলাকায় রাজত্ব করছিলেন। মুদ্রাগত সাক্ষ্য থেকে জানা যায়, ৪১০-৪১১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত তাদেরকে ওই এলাকা থেকে উৎখাত করতে সক্ষম হলেন। যদিও শক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চলে আসছিল সমুদ্রগুপ্তের আমল থেকেই। পশ্চিম ভারতে শক শাসনের অবসানের ফলে উর্বর ও সমুদ্রসন্নিহিত বন্দর এলাকা, যা অর্থনৈতিকভাবে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, গুপ্তদের অধিকারে আসে।
বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সচেষ্ট হয়েছিলেন এবং পারিপার্শ্বিক রাজ্যগুলির সাথে মিত্রতাকে সুরক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। তিনি নাগ বংশীয় কন্যা কুবেরনাগাকে বিবাহ করেন। এই বিবাহ সম্পর্ক তাকে গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চল ও মধ্য ভারতে গুপ্তদের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছিল। চন্দ্রগুপ্ত- কুবের নাগা কন্যা প্রভাবতী গুপ্তার বাকাটক রাজা রুদ্রসেনের সঙ্গে বিবাহ হয় এবং তিনি দরবারে অগ্রমহিষীর মর্যাদা পান। সম্ভবত তাঁর এই সমস্ত প্রচেষ্টা ছিল শকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রস্তুতি স্বরূপ।
দিল্লির কুতুবমিনারের কাছে লৌহস্তম্ভ-এ 'চন্দ্র 'নামে রাজার নাম আছে। তিনি এবং দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত সম্ভবত এক এবং অভিন্ন ব্যক্তি। এই রাজা একাধারে বঙ্গের শত্রুগোষ্ঠীকে পর্যুদস্ত করেছিলেন; সিন্ধুর সপ্তমুখ অতিক্রম করে বাহ্লিক দেশ জয় করেছিলেন। তার দ্বিগবিজয় দক্ষিনে সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। বিস্তৃত এই বিবরণে অতিশয়োক্তি আছে, তবে এই রাজা যে প্রবল পরাক্রমশালী ছিলেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এই 'চন্দ্র' রাজা যে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তই ছিলেন তা মনে করার পেছনে দুটি যুক্তি আছেঃ এক, নামের মধ্যে মিল, দুই, স্তম্ভটি দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সমসাময়িক। তবে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের বাহ্লিক দেশ থেকে দক্ষিণে সমুদ্র পর্যন্ত সাম্রাজ্য স্থাপনের কথা মেনে নেওয়া যায় না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন