Please visit our Homepage and Subscribe us.
Thanks for reading.
বখতিয়ার খলজীর বিহার ও বঙ্গদেশ জয়
মুহাম্মদ ঘুরীর অত্যন্ত বিশ্বস্ত অনুচর ছিলেন বক্তিয়ার খলজি। তার পুরো নাম ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী। বিহার ও বঙ্গদেশ জয়ের কৃতিত্ব তারই। বিহারে তখন পাল রাজাদের দুর্বল উত্তরপুরুষদের শাসন চলছিল। মিনহাজউদ্দিন এর লেখা তবাকাৎ ই নাসিরী গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, তিনি দক্ষিণ বিহারের ওদন্তপুর আক্রমণ ও লুণ্ঠন করেন। এছাড়া তিনি আরো কতগুলি বৌদ্ধ বিহার আক্রমণ করে প্রচুর বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কে হত্যা করেন এবং বহু সম্পত্তি ও পুথিপত্র নষ্ট করেন। নালন্দা ও বিক্রমশিলা তার অধিকারে চলে যায়।
বখতিয়ার খলজী |
বঙ্গদেশে তখন রাজত্ব করছিলেন সেন বংশের রাজা লক্ষণ সেন। বিহার অধিকারের পর বক্তিয়ার খলজি বঙ্গদেশের দিকে অগ্রসর হন। মিনহাজের রচনা থেকে জানা যায়, মাত্র 17 জন অশ্বারোহী নিয়ে তাতার দেশীয় বণিকের ছদ্মবেশে বক্তিয়ার খলজি নবদ্বীপে প্রবেশ করেন। রাজা লক্ষণ সেন সেই সময় নবদ্বীপে অবস্থান করছিলেন। বখতিয়ার খলজীর অতর্কিত আক্রমনের সামনে রাজার রক্ষীবাহিনী রুখে দাঁড়াতে পারেনি। ভীত সন্ত্রস্ত বৃদ্ধ রাজা নিরুপায় হয়ে খিড়কি-দরজা দিয়ে নৌকাযোগে ঢাকার নিকট সোনারগাঁওয়ে পালিয়ে যান। বক্তিয়ার খলজি নবদ্বীপ সহ সমগ্র নদিয়া অধিকার করে লক্ষণাবতীকে তার রাজধানী স্থাপন করেন। মোহাম্মদ ঘড়ি বক্তিয়ার বক্তিয়ারের শাসনকে স্বীকৃতি দেন।
লক্ষণ সেনের এরূপ পলায়ন এবং তার বাহিনীর 17 জন অশ্বারোহীর বিরুদ্ধে পেরে না ওঠার প্রকৃত কারণ কি ছিল? প্রকৃতপক্ষে পশ্চিম ভারত থেকে বঙ্গদেশে একমাত্র রাস্তা, যা 'দ্বারবঙ্গ' নামে পরিচিত ছিল, তার সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। নবদ্বীপে এসেছিলেন নিশ্চিন্তে ধর্মাচরণের উদ্দেশ্যে। তাই সেখানে সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি ভাবেননি। চতুর বক্তিয়ার খলজির মূলপথ পরিহার করে অরণ্যসংকুল ঝাড়খণ্ডের মধ্য দিয়ে অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে নবদ্বীপে প্রবেশ করেছিলেন, যা ছিল অরক্ষিত। নবদ্বীপের যেটুকু ব্যবস্থা ছিল তা রাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য। তা দিয়ে বক্তিয়ার খলজির বাহিনীকে রোধ করা সম্ভব ছিল না।
Thanks for reading.
বক্তিয়ার খলজি যখন 17 জন সৈন্য নিয়ে লক্ষণ সেনের প্রাসাদে অতর্কিত আক্রমণ করেন তখন লক্ষণ সেন দুপুরবেলা খেতে বসেছিলেন। ঘোড়া বিক্রি করার বনিক সেজে তিনি সভা প্রবেশ করেছিলেন এবং তৎক্ষণাৎ বিনাশ লীলায় মত্ত হয়ে ওঠেন ।বিভিন্ন সভাসদদের হত্যা করা নিহত-আহত করা কোন কিছুই তিনি বাদ রাখেনি লুটতরাজ তো ছিলই। সংবাদটি লক্ষণ সেনের কাছে পৌঁছলে তিনি পেছনের গোপন দরজা দিয়ে নবদ্বীপ পলায়ন করেন। এ বিষয়ে বিতর্ক আছে যে লক্ষণ সেন সত্যি সত্যি পালিয়ে গিয়েছিলেন নাকি বক্তিয়ার এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। এ সম্পর্কে জানতে রমেশ চন্দ্র মজুমদারের History of Bengal গ্রন্থটি উপযোগি।
উত্তরমুছুন