Please visit our Homepage and Subscribe us.
মহজরনামা
ইবাদতখানায় আলোচনা চলাকালীন 1579 খ্রিস্টাব্দে মে মাসে মহজর ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে বদাউনি নিজে উপস্থিত ছিলেন বলে এ প্রসঙ্গে তার বিবরণ যথেষ্ট প্রামাণ্য। ঘোষণাপত্রটির রচয়িতা ছিলেন আবুল ফজলের পিতা শেখ মোবারক। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শেখ আব্দুন নবী এবং আব্দুল্লাহ সুলতানপুরী সহ মোট 7 জন বিখ্যাত আলেম।
Akbar |
মহজর ঘোষণা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ বলেছেন যে, পোপের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আকবর নিজেকে অভ্রান্ততার গুন আরোপ করেছিলেন। মাখনলাল রায় চৌধুরী মনে করেন যে, এর দ্বারা আকবর তুর্কি খলিফাদের ও ইরানের শিয়াদের হাত থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিলেন। পাকিস্তানের কয়েকজন ঐতিহাসিক একে 'অসৎ দলিল' বলে অভিহিত করেছেন, কারণ এর ফলে 'অশিক্ষিত' আকবরের হাতে ইসলামের আইনের ব্যাখ্যা দেওয়ার অধিকার এসে গেছিল। প্রসঙ্গত, তৈমূর বংশীয়রা বাইরের কোন লোককে কখনো খলিফা বলে মানেননি। সুতরাং তুর্কি খলীফার বিরুদ্ধে যাবার কোনও প্রশ্নই ওঠেনা।
অধ্যাপক সতীশচন্দ্র দেখিয়েছেন যে, মহজর ঘোষণা ভারতে নতুন নয়। সুলতানি যুগে গিয়াসউদ্দিন বলবন এবং আলাউদ্দিন খলজি শাসনের খাতিরে এই ধরনের আদেশনামা জারি করতেন। মথুরাতে এক ব্রাহ্মণ মসজিদ বানানোর মালমশলা দিয়ে মন্দির নির্মাণ করেছিল এবং তাকে বাধা দিতে গেলে সে মহম্মদের নামে গালাগালি করেছিল। এই অপরাধে তাকে ভারপ্রাপ্ত বিচারক আবদুন নবী মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন, যা আকবরের পছন্দ হয়নি এবং একজন 'হানফী' মুসলমান হিসাবে আব্দুন নবীর এই বিচারকে তিনি অন্যায় এবং আদর্শচ্যুতি হিসেবেই দেখেছিলেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আকবর শেখ মুবারকের উপদেশে আলেমদের ক্ষমতা খর্ব করে নিজেকে রাষ্ট্রের পাশাপাশি ধর্ম ব্যাপারেও প্রধান প্রতিপন্ন করতে উদ্যোগ নেন। এবং একই সাথে আকবর ধর্মীয় শান্তিরক্ষা ব্যাপারে তুর্কির অটোমান শাসক এবং ইরানের সাফবিদ শাসকদের চেয়ে নিজেকে উত্তম হিসাবে বিশ্বে তুলে ধরেতে চাইছিলেন। কারণ দলিলের শুরুতেই বলা হয়েছিল, "হিন্দুস্তানে শান্তি ও ন্যায়বিচার রয়েছে"।
আলীগড় গবেষক ইকতিদার আলাম খান দেখিয়েছেন, মহজর ঘোষণার সঙ্গে তার ধর্মীয় উদারতার কোন সম্পর্ক নেই। সবই ছিল রাজনৈতিক প্রয়োজনে। তিনি উজবেগ বিদ্রোহ দমনের পর রাজপুতদের বলপূর্বক বশে রাখার নীতি গ্রহণ করেছিলেন এবং গোঁড়া মুসলমান মানসিকতাকে খুশি করতে চেয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যেই তিনি ভারতের গোঁড়া মুসলমানদের একমাত্র প্রধান হিসেবে স্বীকৃতি পেতেই মহজরনামা ঘোষণা করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে আবুল ফজল মহজর নিয়ে আলোচনা করতে অস্বস্তি বোধ করেছেন বলেই তার পিতার রচনা সত্ত্বেও তিনি এই প্রসঙ্গটি সচেতনভাবে এড়িয়ে গেছেন। 1580 খ্রিস্টাব্দের অভিজাত বিদ্রোহ আকবরকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল যে তার এই নীতি ব্যর্থ হয়েছে। তাই আকবর নিঃশব্দেই মহজর ঘোষণাকে বাতিল করে দিয়েছিলেন।
ব্যর্থ হলেও মহজর ঘোষণার ফলে উলেমা সম্প্রদায়ের সাথে আকবরের সম্পর্ক তিক্ত হল। আকবর মুসলিম জনগণের উপর নিজের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এটাও প্রমাণ করতে সক্ষম হলেন যে হিন্দুস্থানের শাসনযন্ত্র সব লোকের জন্যই সমানভাবে কাজ করবে।
Thanks for reading.
Abdul Mojaffar Mondal
Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya
দুজন প্রসিদ্ধ পাকিস্তানি ঐতিহাসিক ইক্রাম ও রশিদ মতামত দিয়েছেন যে এটি ইসলামের আইন মেনে করা হয়েছিল এবং শরীয়ত ও সরকারের মধ্যে ছিল একটি বোঝাপড়া ব্যবস্থা| এই মতামত ঐতিহাসিকরা মেনে নিলেও আরো বলেছেন যে আকবর লাগামছাড়া শাসনব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিলেন এটি ছিল তার একটি প্রয়াস |
উত্তরমুছুনএই টপিক টা ভিডিও করে বুঝিয়ে দিলে ভালো হয়
উত্তরমুছুনThank you 🙏 sir.
উত্তরমুছুনThank 🌹you sir.
উত্তরমুছুন