Please visit our Homepage and Subscribe us.
1573 সালের পর থেকে আকবরের ধর্মনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। তিনি সকল ধর্মের সার আহরণের কথা ভাবতে থাকেন। বদাউনীর মতে, উজবেক অভিজাতদের পরাজিত করার পর এবং মালব রাজস্থান গুজরাট জয়ের পর সাম্রাজ্যের বিশাল বিস্তার হয়েছিল এবং আকবরের বিরুদ্ধাচরণ করার মত কেউ ছিলেন না। সম্রাটের হাতে সময় ছিল। তাই বিভিন্ন মতাবলম্বী লোকেদের সঙ্গে আলোচনা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
Thanks for reading.
Abdul Mojaffar Mondal
Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya
আকবরের ইবাদতখানা
আকবরের ধর্মনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল ইবাদতখানা স্থাপন। 1575 খ্রিস্টাব্দে আকবর ফতেপুর সিক্রিতে ইবাদতখানা স্থাপন করেন। শেখ আব্দুল্লাহ নিয়াজি নামে এক গুজরাটি সুফি সন্তের উপাসনাস্থলকে কেন্দ্র করে আকবর ধর্ম আলোচনার জন্য একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। এই বাড়িই ইবাদৎখানা নামে পরিচিত হয়। সম্রাটের প্রাসাদ থেকে এটা খুব বেশী দুরে ছিল না, যাতে আকবর সহজেই যাতায়াত করতে পারতেন।
ইবাদতখানায় জেসুইটসরা |
ইবাদত খানায় ধর্মীয় আলোচনা করার ধারণা নতুন নয়। উমাইয়া এবং আব্বাসীয় খলিফাদের সময় এই ধরনের আলোচনার রেয়াজ ছিল। এমনকি ইসলাম ধর্মে আসার পর মোঙ্গলরাও এই ধরনের আলোচনা করেছে। তৈমুর বংশীয়রাও এই পরম্পরা মেনে চলত।
ইবাদতখানায় প্রথমদিকে সুন্নী মতাবলম্বী পণ্ডিতদের আলোচনা হত। প্রতি বৃহস্পতিবার রাত্রে আকবরের উপস্থিতিতে আলোচনা শুরু হত। আলোচনার সময় ক্রমশ প্রসারিত হতে থাকায় বহু রাতে আলোচনাস্থল সম্রাটের শয়নকক্ষে স্থানান্তরিত হত। আমন্ত্রিত আলিম ও অন্যান্য দের সভাকক্ষে চার ভাগে বিভক্ত হয়ে আসন গ্রহণ করতে হত এবং আকবর বিভিন্ন গোষ্ঠীর কাছে গিয়ে মত বিনিময় করতেন। তর্কের বিষয় ছিল নানাবিধ। তার মধ্যে অন্যতম ছিল আকবরের বিবাহ। সম্রাট কূটনৈতিক প্রয়োজনে রাজপুতানাতে তখন বিবাহের রাজনীতি শুরু করেছিলেন। কিন্তু একজন মুসলমান পুরুষ কয়টি বিবাহ করতে পারে-- এই নিয়ে, অন্যান্য বিষয়ের মতই, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে মতবিরোধ ছিল। আকবর তার যথাযথ উত্তর লাভে ব্যর্থ হন। আকবর চেয়েছিলেন, আলেমদের কাছ থেকে ধর্ম সম্পর্কে এবং ব্যবহারিক জীবনে তার প্রয়োগ সম্পর্কে সঠিক দিশা। কিন্তু দেখা গেল, একজন আলেম অন্যের ওপর তার নিজের বিদ্যার গরিমা জাহির করতেই অধিক ব্যস্ত। এমনকি কখনো কখনো হাতাহাতির উপক্রম হত।
আলেমদের কাছ থেকে যথাযথ উত্তর না পেয়ে আকবর ইবাদত খানার দরজা 1578 খ্রিস্টাব্দে হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান এবং জরাথুস্ট্রবাদীদের জন্য উন্মুক্ত করলেন। এর ফলে আরো ঝামেলা বেড়ে গেল এবং হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে গেল। আকবর শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে 1581 খ্রিস্টাব্দে ইবাদতখানার আলোচনা বন্ধ করে দেন এবং 1582 খ্রিস্টাব্দে ইবাদৎখানা একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আকবর ঠিক কি উদ্দেশ্যে ইবাদতখানা স্থাপন করেছিলেন তা বলা মুশকিল। কারণ আকবরের উদ্দেশ্য যদি সত্য অনুসন্ধান হত, তাহলে তিনি অন্যভাবেও তা করতে পারতেন। কারণ তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন ধর্মের পন্ডিতদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, যেমন জৈন পন্ডিত পুরুষোত্তম, আলিম শেখ তাজউদ্দীন প্রমূখ। এদের কেউই কখনও ইবাদতখানায় প্রবেশ করেননি।
ইবাদত খানায় আকবরের কোন লাভ হয়নি এই কথা বলা যাবে না। কারণ ইবাদতখানার আলোচনাগুলো থেকেই তিনি উপলব্ধি করেন যে, কোন ধর্মই একক ভাবে সত্য নয়। প্রতিটি ধর্মের নিজস্ব সারসত্য আছে এবং প্রতিটি ধর্মই ঈশ্বরের কাছে মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে। এই উপলব্ধি থেকেই আকবর সুল-ই-কুল বা সকল ধর্মের সহাবস্থানের পরিকল্পনা নেন। অন্যদিকে উলেমা সম্প্রদায়ের আসল রূপ উদঘাটিত হয় এবং আকবর তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবেন।
Thanks for reading.
Abdul Mojaffar Mondal
Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya
আকবরের ইবাদত খানায় উপস্থিত থাকতেন এমন কিছু ব্যক্তিত্বের নাম হল জেসুইট পন্থী ফাদার এন্টনি টমাস মনসারেট, অ্যাকোয়া ভাইভা জৈন গুরু বিজয়সেন সূরী,হরিবিজয় সূরী,হিন্দু পন্ডিত পুরুষোত্তম,বৌদ্ধ,নাস্তিক,শিয়া ও সুন্নি পন্থী মুসলমান প্রমুখ |
উত্তরমুছুনThank you sir.
উত্তরমুছুনThank you 🙏🙏🙏🙏🙏sir.
উত্তরমুছুন