Abdul Mojaffar Mondal,
Assistant Professor,
Sonarpur Mahavidyalaya
তরাইনের যুদ্ধ ও তার গুরুত্ব
আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে গজনী ও হেরাতের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ছিল ঘুর রাজ্য। গজনীর এবং ঘুর রাজ্য ছিল পরস্পর বিবাদমান। এই বিবাদের সূত্র ধরেই 1173 খ্রিস্টাব্দে ঘুর শাসক গিয়াস উদ্দিন মোহাম্মদ গজনী রাজ্য দখল করেন এবং তিনি তাঁর ভ্রাতা মইজুদ্দিন মহম্মদ বিন সাম কে গজনীর শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। ইনি ভারতের ইতিহাসে মহাম্মদ ঘরি নামে পরিচিত। বড় ভাই এর অধীনে নিযুক্ত সেনাপতি হিসাবেই মোহাম্মদ ঘরি ভারতে অভিযান করেছিলেন। মোহাম্মদ ঘরি যখন ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিকে বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান করছিলেন সেই সময় উত্তর ভারতে চৌহান রাজবংশ তৃতীয় পৃথ্বীরাজ এর নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। মোহাম্মদ ঘরি ও পৃথ্বীরাজ চৌহান এর মধ্যে তরাইনের প্রান্তরে দুটি যুদ্ধ হয়েছিল (1191 ও 1192 সালে), যা যথাক্রমে তরাইনের প্রথম ও দ্বিতীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত।
1189 খ্রিস্টাব্দে মোহাম্মদ ঘরি ভাতিন্ডা আক্রমণ করে অধিকার করেন এবং জিয়াউদ্দিন নামে একজন অনুচরকে দুর্গের অধিপতি নিযুক্ত করেন। এরপর তরাইনের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে পৃথ্বীরাজের এক বিশাল বাহিনী মোহাম্মদ ঘরিকে পরাজিত করে। এই যুদ্ধে বহু রাজপুত রাজা পৃথ্বীরাজ এর পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। কেবল কনৌজের রাঠোর রাজা জয়চাঁদ নিরপেক্ষ ছিলেন। ঘড়ি কোনোক্রমে প্রাণ নিয়ে রণক্ষেত্র ত্যাগ করেন। এর ঠিক এক বছর পরে তিনি পুনরায় পৃথ্বীরাজ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং এই যুদ্ধে তিনি জয় লাভ করেন। পলাতক পৃথ্বীরাজকে পরবর্তীকালে বন্দি করা হয়। মিনহাজ এর মতে পৃথ্বীরাজকে হত্যা করা হয়েছিল। ঐতিহাসিক হাসান নিজামী দেখিয়েছেন যে, পৃথ্বীরাজকে আজমির ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কারণ এই সময়কার কয়েকটি মুদ্রায় তারিখ সহ এক পৃষ্ঠে "পৃথ্বীরাজ দেব" এবং অপর পৃষ্ঠে 'শ্রী মহাম্মদ সাম" কথাগুলি লেখা আছে। অবশ্য পরবর্তীকালে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে পৃথ্বীরাজকে হত্যা করে তার পুত্রকে সিংহাসন দেওয়া হয়েছিল। দিল্লি তোমার শাসকদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে ঘরিদের রাজনৈতিক নীতির পরিবর্তন ঘটে এবং আজমির ও দিল্লি দখল করে সেখানে তুর্কি শাসক নিয়োগ করা হয়।
তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক সীমা মীমাংসক যুদ্ধ। পৃথ্বীরাজের পরাজয় এর ফলে উত্তর ভারতের রাজনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। বিদেশিদের বাধা দেওয়ার মত আর কোন শক্তি অবশিষ্ট রইল না। ভারতীয় রাজনীতিতে রাজপুত জাতির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ রুদ্ধ হয়ে গেল। একইসাথে এই পরাজয় পৃথ্বীরাজের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা নজির স্থাপন করল। কারণ প্রথম যুদ্ধে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও ঘরির অনুগামীদের উদ্দেশ্য তিনি বুঝতে পারেননি, তাই পাঞ্জাব থেকে তাদের বিতাড়নের ব্যবস্থাও করেননি। অন্যদিকে তরাইনের যুদ্ধের মাধ্যমে ভারতে তুর্কি সাম্রাজ্য স্থাপনের পথ উন্মুক্ত হয়। মহম্মদ ঘরি তার বিজিত অঞ্চলের দায়িত্ব কুতুবউদ্দিন আইবক নামে এক বিশ্বস্ত অনুচর এর উপর অর্পণ করে গজনী ফিরে যান। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো একজন দাসের শাসন প্রতিষ্ঠা হল। কুতুবউদ্দিন আইবক ভারতে সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা করলেন যা পরবর্তী 300 বছর স্থায়ী হল।
1189 খ্রিস্টাব্দে মোহাম্মদ ঘরি ভাতিন্ডা আক্রমণ করে অধিকার করেন এবং জিয়াউদ্দিন নামে একজন অনুচরকে দুর্গের অধিপতি নিযুক্ত করেন। এরপর তরাইনের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে পৃথ্বীরাজের এক বিশাল বাহিনী মোহাম্মদ ঘরিকে পরাজিত করে। এই যুদ্ধে বহু রাজপুত রাজা পৃথ্বীরাজ এর পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। কেবল কনৌজের রাঠোর রাজা জয়চাঁদ নিরপেক্ষ ছিলেন। ঘড়ি কোনোক্রমে প্রাণ নিয়ে রণক্ষেত্র ত্যাগ করেন। এর ঠিক এক বছর পরে তিনি পুনরায় পৃথ্বীরাজ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং এই যুদ্ধে তিনি জয় লাভ করেন। পলাতক পৃথ্বীরাজকে পরবর্তীকালে বন্দি করা হয়। মিনহাজ এর মতে পৃথ্বীরাজকে হত্যা করা হয়েছিল। ঐতিহাসিক হাসান নিজামী দেখিয়েছেন যে, পৃথ্বীরাজকে আজমির ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কারণ এই সময়কার কয়েকটি মুদ্রায় তারিখ সহ এক পৃষ্ঠে "পৃথ্বীরাজ দেব" এবং অপর পৃষ্ঠে 'শ্রী মহাম্মদ সাম" কথাগুলি লেখা আছে। অবশ্য পরবর্তীকালে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে পৃথ্বীরাজকে হত্যা করে তার পুত্রকে সিংহাসন দেওয়া হয়েছিল। দিল্লি তোমার শাসকদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে ঘরিদের রাজনৈতিক নীতির পরিবর্তন ঘটে এবং আজমির ও দিল্লি দখল করে সেখানে তুর্কি শাসক নিয়োগ করা হয়।
তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক সীমা মীমাংসক যুদ্ধ। পৃথ্বীরাজের পরাজয় এর ফলে উত্তর ভারতের রাজনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। বিদেশিদের বাধা দেওয়ার মত আর কোন শক্তি অবশিষ্ট রইল না। ভারতীয় রাজনীতিতে রাজপুত জাতির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ রুদ্ধ হয়ে গেল। একইসাথে এই পরাজয় পৃথ্বীরাজের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা নজির স্থাপন করল। কারণ প্রথম যুদ্ধে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও ঘরির অনুগামীদের উদ্দেশ্য তিনি বুঝতে পারেননি, তাই পাঞ্জাব থেকে তাদের বিতাড়নের ব্যবস্থাও করেননি। অন্যদিকে তরাইনের যুদ্ধের মাধ্যমে ভারতে তুর্কি সাম্রাজ্য স্থাপনের পথ উন্মুক্ত হয়। মহম্মদ ঘরি তার বিজিত অঞ্চলের দায়িত্ব কুতুবউদ্দিন আইবক নামে এক বিশ্বস্ত অনুচর এর উপর অর্পণ করে গজনী ফিরে যান। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো একজন দাসের শাসন প্রতিষ্ঠা হল। কুতুবউদ্দিন আইবক ভারতে সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা করলেন যা পরবর্তী 300 বছর স্থায়ী হল।
তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধের কারণ ব্যাখ্যা করো
উত্তরমুছুনএই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুন