সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আদি মধ্যযুগে দক্ষিণ ভারতের বণিক সংঘ

  আদি মধ্যযুগে দক্ষিণ ভারতের বণিক সংঘ ‘ গিল্ড’ বলতে আমরা সাধারণত বুঝি এমন এক বাণিজ্যিক সংগঠন যা কতকগুলি নিয়মের দ্বারা পরিচালিত, যা সব সদস্য মেনে চলে। আদি মধ্যযুগে দক্ষিণ ভারতের বাণিজ্য সংগঠনগুলি এই শর্ত পূরণ করে না, যদিও ‘বার্নাজু ধর্ম’ নামক আচরণের এক ধরনের আদর্শ তাদের সামনে ছিল, যা গিল্ডের নিয়মাবলিকে মনে করায়। ড. আর. চম্পকলক্ষ্মী তাই এইসব প্রতিষ্ঠানকে ‘গিল্ড’ না বলে বাণিজ্য সংস্থা বা বাণিজ্যিক সমবায় বলার পক্ষপাতী। কার্যপরিধি অনুসারে তাদের মােটামুটি তিন ভাগে ভাগ করা যায়। ১। নগরম স্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করতে। সব বিপণন কেন্দ্রেই এদের অস্তিত্ব ছিল। এখানে ভ্রাম্যমাণ বণিকদের সঙ্গে স্থানীয় বণিকরা পণ্য বিনিময় করত। অন্তত চতুর্দশ শতক পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতে, বিশেষত তামিলনাড়ুতে এদের অস্তিত্ব ছিল। দক্ষিণ ভারতে মুদ্রা কমই ব্যবহৃত হত। পণ্য বিনিময় ব্যবস্থা (barter system) অধিক প্রচলিত ছিল।কতকগুলি বিশেষ পণ্যের ক্ষেত্রে যেমন বস্ত্র বা তেল— নগরমের পক্ষ থেকে উপ-নগরমকে কেনাবেচার দায়িত্ব দেওয়া হত। সামুদ্রিক বাণিজ্যে নিযুক্ত বণিকদের ক্ষেত্রে আমরা ‘পারগলগরম’ শব্দের উল্লেখও পেয়েছি। ২। ...

হিস্ট্রি ও ইতিহাসের পার্থক্য | Difference between 'History' and 'Itihas'

হিস্ট্রি ও ইতিহাসের পার্থক্য সাধারণভাবে আমরা হিস্ট্রি ও ইতিহাসকে সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। তবে ইতিহাস ও হিস্ট্রির মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।  ইতি , হ , আস এই তিনটি পদের সমন্বয়ে ইতিহাস শব্দটি গঠিত। এর আক্ষরিক অর্থ ' এই রূপ ছিল ' । ইতিহাস শব্দটির আভিধানিক অর্থ অতীতের সংগঠিত বাস্তব কাহিনী , প্রাচীন কাহিনী বা পুরাবৃত্ত। History শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ 'Histor' শব্দ থেকে যার অর্থ জ্ঞান , এবং গ্রিক শব্দ হিস্টোরিয়া থেকে যার অর্থ সযত্নে অনুসন্ধান করা। ব্যুৎপত্তিগত অর্থের দিক দিয়ে হিস্ট্রি শব্দের তাৎপর্য ব্যাপকতর। ইতিহাস বলতে যে কোনো পুরাকাহিনীকে বোঝানো হয় , কিন্তু হিস্ট্রি হল অতীতের বিষয়ে অনুসন্ধানলব্ধ জ্ঞান।   আধুনিক জ্ঞান চর্চায় যাকে হিস্ট্রি বলে অর্থাৎ অতীতের তথ্যনিষ্ঠ  কালানুক্রমিক পুনর্নির্মাণ -- প্রাচীন ভারতের তেমন কিছু ছিল কি ? একাদশ শতকের আরব পর্যটক আলবিরুনী ভারতে ' ইতিহাস চেতনার অভাব ' লক্ষ্য করেছেন। পরবর্তীকালে ঔপনিবেশিক যুগে প্রাচীন ভারতের বস্তু জগৎ সম্পর্কে উদাসীনতাকে ইতিহাস চেতনার অভাব হিসেবে তুলে ধরা হয়। প্রাচীন ইউরোপে রচিত...

হরপ্পার নগর পরিকল্পনা | Town Planning of Harappan Civilization

 হরপ্পার নগর পরিকল্পনা ১৯২২ সালে দয়ারাম সাহানী ও রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় যথাক্রমে দুই নগর হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পান। এর ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে তাম্রপ্রস্তর যুগে এক সু প্রাচীন  সভ্যতার অস্তিত্বের ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ থাকল না। এই সভ্যতার কালসীমা আনুমানিক ২৬০০ খ্রীঃ পূঃ থেকে ১৭৫০ খ্রীঃ পূঃ পর্যন্ত। এই সভ্যতার অধিকাংশ কেন্দ্র সিন্ধু নদের তীরে আবিস্কৃত হয়েছিল। প্রথম দিকে তাই এই সভ্যতা সিন্ধু সভ্যতা নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে ভারত ও পাকিস্তানের এক বিশাল এলাকা জুড়ে এই সভ্যতার ভোগলিক প্রসার আবিস্কৃত হয়েছে। প্রত্নতত্ত্বের নিয়মে তাই প্রথম আবিস্কৃত প্রত্নস্থল হরপ্পার নামে এই সভ্যতার নামকরণ হল হরপ্পা সভ্যতা।  হরপ্পা সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ঠ্য এর নগরকেন্দ্রীকতা। প্রায় ৫০ হাজার (মতান্তরে ৭০ হাজার) বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই সভ্যতায় এতাবৎ প্রায় ১৪০০ টি নগর কেন্দ্র আবিস্কৃত হয়েছে। এটাই ভারতীয় উপমাহাদেশে প্রথম নগরায়ন। আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে প্রতিতি নগরের পরিকল্পনা প্রায় একই রকম। হরপ্পা ও মহেঞ্জদাড়ো এই দুটি নগর নিঃসন্দেহে দুই বৃহত্তম নগর। এদের আয়তন যথা...